আমদানির বিকল্প হিসেবে পেপার বোর্ড উৎপাদনে যাচ্ছে বসুন্ধরা গ্রুপের নতুন প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা পাল্প অ্যান্ড বোর্ড মিলস লিমিটেড। মূলত তৈরি পোশাক প্যাকেজিংয়ের কাজে বেশি ব্যবহূত এ পেপার বোর্ড দেশে প্রথমবারের মতো উৎপাদন হতে যাচ্ছে। এত দিন এই পেপার বোর্ডের চাহিদার পুরোটাই আমদানি করা হতো। উৎপাদন শুরু হলে চাহিদার সিংহভাগ জোগান দিতে পারবে দেশের শীর্ষ এই শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপ।
ব্যবহূত কাগজ বা বর্জ্য কাগজ থেকে পেপার বোর্ড উৎপাদনের লক্ষ্যে ফিনল্যান্ডের বিশ্বখ্যাত কম্পানি ভ্যালমেট টেকনোলজিস ইনকরপোরেটেডের কাছ থেকে প্রতিদিন ১০০০ টন উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি মেশন কিনতে গতকাল বৃহস্পতিবার একটি চুক্তি করেছে বসুন্ধরা পাল্প অ্যান্ড বোর্ড মিলস লিমিটেড। রাজধানীর বারিধারার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত বসুন্ধরা ইন্ডাস্ট্রিয়াল হেডকোয়ার্টার-২-এ এই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সাফওয়ান সোবহান ও উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান এবং ভ্যালমেট টেকনোলজিসের পেপার মিলস বিসনেস ইউনিটের ভাইস প্রেসিডেন্ট (সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং) পেট্রি পোকুনেন এবং সেলস ম্যানেজার ভেলি মিসকালা।
জানা গেছে, মেশিন দুটির দাম ১৪৮ মিলিয়ন ইউরো।
বাংলাদেশি টাকায় প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা। পেপার বোর্ড উত্পাদনের এই প্রকল্পে বসুন্ধরার বিনিয়োগ প্রায় চার হাজার কোটি টাকা। কেরানীগঞ্জের কাউটাইলে বসুন্ধরা গ্রুপকে দেওয়া সরকারের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে ৬০০ বিঘা জমিতে এই প্রকল্পটি স্থাপন করা হবে। এই চুক্তির আওতায় আগামী ২৭ মাসের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের পরিকল্পনা রয়েছে বসুন্ধরার।
এই বোর্ড উত্পাদন শুরু হলে প্রতিদিন দুই হাজার টন করে মাসে ৬০ হাজার টন পেপার বোর্ডের জোগান দিতে পারবে বসুন্ধরা একাই। এই বোর্ডগুলো সব ধরনের শিল্পের প্যাকেজিংয়ের কাজে ব্যবহূত হলেও তৈরি পোশাকসহ রপ্তানিমুখী পণ্যের প্যাকেজিংয়েই বেশি ব্যবহূত হয় বলে জানান বসুন্ধরা গ্রুপের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান। পরবর্তীতে এ রকম আরো দুটি মেশিন কেনার পরিকল্পনাও রয়েছে বলে জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আজকে (গতকাল) আমরা এক হাজার টন উত্পাদন ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি মেশিন কেনার জন্য চুক্তি করলাম। ভ্যালমেট বিশ্ব্যবিখ্যাত একটি কম্পানি।
যারা এই খাতে এক নম্বর প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত। এই মেশিনে সুইডিস বোর্ড, ডুপ্লেক্স বোর্ড, আর্ট কার্ড উত্পাদন করা হবে, যা সম্পূর্ণ আমদানিবিকল্প। বর্তমানে দেশে প্রায় পাঁচ লাখ টন পেপার বোর্ড আমদানি হয়। আমরা কেবল এই বোর্ডের চাহিদা পূরণে স্বয়ংসম্পূর্ণ হব না, কিছু বোর্ড আমরা রপ্তানিও করতে পারব।’
তিনি আরো বলেন, ‘এই প্রকেল্প আমাদের ৪ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ থাকবে। এ থেকে আমরা বছরে ১০ হাজার কোটি টাকার সেলস রেভিনিউ পাবো। তাছাড়া এই বোর্ড তৈরিতে যে কাঁচামাল ব্যবহার করা হবে তার বেশির ভাগই বর্জ্য কাগজ। এটা দেশের জন্য একটি মাইল ফলক। এই ধরনের মেশিন বাংলাদেশ প্রথম বসুন্ধরাই আনছে।’
মোস্তাফিজুর রহমান জবাবে তিনি বলেন, ‘দেশে কোনো পণ্য উত্পাদন করা হলে আমদানি করা পণ্যের থেকে তার দাম তুলনামূলক কম হয়। ফলে শিল্পের প্যাকেজিংয়ের খরচ কমে আসবে এবং আমদানি কমে যাওয়ায় বিদেশি মুদ্রা সাশ্রয় হবে। সবচেয়ে বড় কথা হলো—আমরা বর্জ কাগজ দিয়ে এই পেপার বোর্ড তৈরি করতে পারব। ৯০ শতাংশ কাঁচামাল হলো বর্জ্য কাগজ। গুনগত মান হবে একেবারে আন্তর্জাতিক মানের। আমরা এখানে যে ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করছি যা ফার্স্ট গ্রোইং কান্ট্রিগুলোতেও ব্যবহার হয় না। এজন্যই আমরা ভ্যালমেটকে বেছে নিয়েছি।’
মোস্তাফিজুর রহমান আরো বলেন, ‘এই প্রকল্পের একটি বড় দিক হলো আমরা যে অর্থনৈতিক অঞ্চলে এই প্রকল্পটি করতে যাচ্ছি সেটা একটি অনুন্নত অঞ্চল। যেটাকে আমরা নিজেরাই উন্নয়নের দায়িত্ব নিয়েছি। সেখানকার রাস্তাঘাটের উন্নয়ন করব। প্রকল্পে পানি শোধনাগার থাকবে। বর্জ্য শোধনাগার থাকবে। ভবিষ্যতে সরকারের অনুমোদন পেলে বিদ্যুৎ প্লান্টও সেখানে করা হবে। এখানে ১০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে।’
ভ্যালমেট টেকনোলজিসের পেপার মিলস বিসনেস ইউনিটের ভাইস প্রেসিডেন্ট, পোকুনেন বলেন, ‘আমাদের এই প্রযুক্তিটি একেবারেই নতুন প্রযুক্তি। গুণগত মানসম্পন্ন পেপার বোর্ড উত্পাদনে এই মেশিনের জুড়ি নেই। এটা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ী।’
মোস্তাফিজুর রহমান আরো বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশকে ভ্যালমেটের জন্য একটি সম্ভাবনাময় বাজার বলে মনে করি। বাংলাদেশ ছাড়াও এই অঞ্চলের অন্য দেশগুলোতে আমাদের ব্যবসা রয়েছে। বিশেষ করে ভারত থেকে আমরা অনেক বেশি ক্রয় আদেশ পাচ্ছি।’
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যানের কারিগরি উপদেষ্টা মোজাম্মেল হোসেন, বসুন্ধরা পেপার মিলস ইউনিট-২-এর হেড অব প্রজেক্ট এবিএম ইয়াসিন, ভ্যালমেট টেকনোলজিসের এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের সেলস পরিচালক এনকে জেইন প্রমুখ।
SOURCE : কালের কণ্ঠবসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের সুদমুক্ত ঋণে স্বাবলম্বী হাজারো পরিবার
Thousands of Families Self-Reliant with Bashundhara Foundation's Interest-Free Loans
ভোলা নৈশ ও দিবা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বসুন্ধরা শুভসংঘের শিক্ষা উপকরণ বিতরণ
Bashundhara Shuvosangho Distributes Educational Materials at Bhola Night and Day school
দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের ভরসার নাম বসুন্ধরা গ্রুপ
Bashundhara Group A Trusted Name for Underprivileged Meritorious Students
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে
Tree Plantation Campaign Held at Rajshahi University
সৈয়দপুরে বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে গাছের চারা রোপণ
Tree Plantation Initiative by Bashundhara Shuvosangho in Saidpur